,

নওগাঁয়ে খরায় পুড়ছে আমন

নওগাঁয়ে সেচ দিয়ে ধানক্ষেত টিকিয়ে রাখছেন কৃষকরা

নওগাঁ প্রতিনিধি: বৃষ্টি নির্ভর নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলগুলোতে খরায় পুড়ছে আমনের আবাদ। পানির অভাবে জেলার পোরশা, সাপাহার ও নিয়ামতপুর উপজেলার ৬১ হেক্টর জমির আমনখেত পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ধানে রোগ ও পোকার আক্রমণও দেখা দিয়েছে।

এবার মৌসুমের শুরু থেকেই খরা চলছে। ফলে প্রায় পুরো মৌসুম জুড়েই সেচ দিয়ে ধানখেত টিকিয়ে রেখেছেন কৃষকরা। এলাকার কোথাও কোথাও পুকুর কিংবা ডোবা থেকে জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। এতে আবাদে কৃষকদের খরচের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ বছর জেলায় প্রায় ২ লাখ ২৪৫ হেক্টর জমিতে আমনের আবাদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।

নওগাঁ বরেন্দ্র বহুমূর্খী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, জেলায় বিএমডিএর মোট সেচযন্ত্র রয়েছে ৪ হাজার ১০৩টি। আমন মৌসুমে ৯১ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে সেচ দেয়ার জন্য গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ৩ হাজার ৩৯৬টি সেচযন্ত্র চালু রয়েছে। সেচযন্ত্র চালুর জন্য এবার প্রিপেইড কার্ড বিক্রি হয়েছে ৮১ হাজার ৭৬২টি। এসব প্রিপেইড কার্ডে এখন পর্যন্ত প্রায় ১২ কোটি টাকার পানি বিক্রি হয়েছে।

বরেন্দ্র অঞ্চল জেলার সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও ধাইরহাট উপজেলা। এসব এলাকায় বছরে একটিমাত্র আবাদ বৃষ্টিনির্ভর আমন। কিন্তু আমনের আবাদ সেচযন্ত্রের সাহায্যে করতে হচ্ছে। এতে কৃষকদের খরচের পরিমাণ বেড়ে গেছে। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে কোথাও কোথাও জমি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। আমন ধান বাঁচানোর জন্য গত কয়েকদিন আগে পোরশায় জুমাআর নামাজের পর বৃষ্টির জন্য মোনাজাত করা হয়েছে।

পোরশা উপজেলার ছাওড় ইউনিয়নের খাড়িপাহাড় গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত বছর তিন বিঘা জমিতে আমন আবাদে খরচ হয়েছিল ২০ হাজার টাকা। কিন্তু এবার সেচ দিয়ে ধান আবাদ করায় গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

পোরশা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ উপজেলার কৃষকরা। ৫০ হেক্টর জমির ধান পুরোপুরি নষ্ট হয়েছে। বাকি জমিগুলো কৃষকেরা বিএমডিএর গভীর নলকূপ ও ব্যক্তিগত সেচযন্ত্রের সাহায্যে পুকুর কিংবা খাল থেকে সেচ দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। সেচের বাড়তি খরচের কারণে এ বছর প্রতি বিঘা জমিতে কৃষকদের দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বাড়তি খরচ হবে।

নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন, জমিতে সেচ দেয়ার জন্য সার্বক্ষণিকভাবে বিএমডিএর সেচ যন্ত্রসমূহ চালু রয়েছে। এবার উৎপাদন কিছুটা ব্যহত হলেও আগামীতে খরা মোকাবেলায় কৃষকদের খরা সহিষ্ণু জাতের ধান আবাদে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর